ডিভোর্সের ২৫ বছর পর নিজের প্রাক্তন স্বামীকে নিজের বৃদ্ধাশ্রমে দেখে চমকে গেলাম । কিছু বুঝতে পারছিনা। এতোবছর পর মানুষটাকে এভাবে দেখতে হবে তা একদম অকল্পনীয় ছিলো

ডিভোর্সের ২৫ বছর পর নিজের প্রাক্তন স্বামীকে নিজের বৃদ্ধাশ্রমে দেখে চমকে গেলাম । কিছু বুঝতে পারছিনা। এতোবছর পর মানুষটাকে এভাবে দেখতে হবে তা একদম অকল্পন
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated

 

ডিভোর্সের ২৫ বছর পর নিজের প্রাক্তন স্বামীকে নিজের বৃদ্ধাশ্রমে দেখে চমকে গেলাম । কিছু বুঝতে পারছিনা। এতোবছর পর মানুষটাকে এভাবে দেখতে হবে তা একদম অকল্পনীয় ছিলো

ডিভোর্সের ২৫ বছর পর নিজের প্রাক্তন স্বামীকে নিজের বৃদ্ধাশ্রমে দেখে চমকে গেলাম । কিছু বুঝতে পারছিনা। এতোবছর পর মানুষটাকে এভাবে দেখতে হবে তা একদম অকল্পনীয় ছিলো।লোকটা একপাশে গুটিসুটি মেরে বসে আছে। দেখতে বড্ড অসহায় লাগছে। নিজের মধ্যে সংকোচ করছে তার সামনে যাবো কি যাবো না।অনেকটা জড়তা নিয়ে শেষ পর্যন্ত তার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।সামনে দাঁড়ানোর পরও লোকটার কোনো ভাবের পরিবর্তন হলো না, বুঝতে অসুবিধা হলোনা, যে সামনে থাকা মানুষটা চোখে দেখতে পায় না।


২৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে আমার সাথে বিয়ে হয়েছিলো সিফাতের। বেশ ভালোই চলছিলো আমাদের সংসার।যৌথ হওয়াতে পুরো পরিবার একসাথে থাকতাম।শান্ত স্বভাবের হওয়াতে সবার সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভালোই ছিলো। আমাকে সবাই ভালোবাসতো। বিয়ের প্রায় দুই বছর অতিক্রম হওয়ার পরও যখন আমাদের সন্তান হচ্ছিল না তখন আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে বিভিন্ন চাপ দিতে লাগলো।অবশেষে রিপোর্ট থেকে জানতে পারি, আমি কখনো মা হতে পারবেনা। এরপর শুরু হয় শ্বাশুড় বাড়ির বিভিন্ন মানসিক যন্ত্রণা। তবুও নিশ্চুপ ছিলাম কারণ আমার পাশে আমার ভালোবাসার মানুষ সিফাত ছিলো।কিন্তু সুখ নামক বস্তু হয়তো সবসময় সয় না।আমার ক্ষেত্রেও তার বিপরীত কিছু হলো না।পরিবারের চাপে সিফাতও আমার থেকে দূরত্ব নিয়ে নিলো।তবুও নিজেকে মানাতাম যে মানুষটা মনের কষ্টে হয়তো এমন করছে।


শ্বশুর বাড়িতে থাকাটা যখন অনেকটা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে গেলো তখন ঠিক করলাম কিছুদিন বাপের বাড়িতে গিয়ে উঠবো এতে হয়তো পরিবেশ কিছুটা শান্ত হবে।যেদিন রাতে সিফাতকে বাপের বাড়ির কথা জানালাম সেদিন রাতে তার কোনো উত্তর পেলামনা।কিন্তু আগেরকার সময়ে বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা বল্লে তার মুখটা কালো হয়ে যেতো,এবারে তার মধ্যে তেমন পরিবর্তন হলোনা।


বাপেরবড়ি যাওয়ার প্রায় তিনদিন বাদে একটা কুরিয়ার এলো যাতে লেখা আছে সিফাতের বিয়ের কথা আর আমাদের ডিভোর্সের পেপার।চিঠি আর ডিভোর্স পেপারটা হাতে নিয়েই আমার পুরো মাথা ফাঁকা হয়ে গেলো ।বুঝতে বাকি রইলো না পুরে বিষয়টা বহুদিন আগে থেকে পরিকল্পিত। শুধু আমার বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিলো।যার জন্য এতো কষ্ট আর অপমান সয়য়ে ছিলাম সেই যখন পাশকেটে চলে গেলো তখন নিজেকে পুরো একা মনে হলো।ভাবলাম ঐ বাড়ি গিয়ে এ বিষয়ে প্রশ্ন করবো,প্রতিবাদ করবো কিন্তু মনে হলো যার জন্য ও বাড়িতে যাবো সেই তো আমাকে চাই না তাই গিয়ে লাভ কি!!! ডিভোর্স পেপারে সাইন করে পাঠিয়ে দিলাম।ডিভোর্স পেপার পাঠানোর পর তার সাথে আর কখনো দেখা বা যোগাযোগ হয়নি কারণ আমি নিজেই সবটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।


ক্ষণে ক্ষণে মনে হতো আমার মতো নিঃসন্তান, স্বামী ত্যাগী মানুষের পৃথিবীতে না থাকা শ্রেয় কিন্তু একটা সময় বুঝতে পারলাম নিজের জন্য না হলেও অন্যের জন্য বাঁচতে হবে।নিজের মতো ভুক্তভোগী নারীদের জন্য বাঁচতে হবে।বাঁচতে হবে ওসব শিশুদের জন্য যারা পরিচয়হীন হয়ে বেঁচে আছে এ পৃথিবীতে। পেছনে ফেলে আসা মানুষগুলোর প্রতি কোনো অভিযোগ রইলোনা। ।মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, সমাজের তাদের জন্য কাজ করবো যারা নিজেদের ত্রুটির জন্য পরিবার পরিজনের কাছে আঘাতপ্রাপ্ত।অতীতকে ভুলে, কঠোর পরিশ্রমে একদিন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলাম।স্থাপিত করলাম এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, বিধবা নারীদের জন্য বিভিন্ন কাজের ব্যবস্থা করেলাম।। আমার মতো যে সকল নারী এ সমাজে অবহেলিত, মানসিক আঘাতে জর্জরিত তাদের জন্য কিছু করতে পারাটাকে নিজের জন্য অনেক সৌভাগ্যের মনে হলো।


অসুস্থ আর অস্বাভাবিক লাগছে সিফাতকে।আমি নাহয় তার আপন ছিলাম না তাই আমাকে ছাড়তে তার হৃদয় কাঁপেনি তাহলে যারা তার আপন ছিলো তারা কেনো তাকে এখানে রেখে গেলো?? একজন সার্ভেন্টকে জিজ্ঞেস করলাম, ওনাকে এখানে কে এনেছে?? উত্তরে সে জানায়, সন্তানরা সবাই বিদেশ থাকে কেউ দায়িত্ব নিতে চাই না তাই আশ্রমে রেখে গিয়েছে।দীর্ঘশ্বাস ফেল্লাম আর মনে মনে চিন্তা করলাম, একসময় নিঃসন্তান হওয়ায় সিফাত আমাকে ছেড়েছিলো আর আজ সে সন্তানরাই তাকে বৃদ্ধাশ্রমে ছেড়ে গেলো।এটাই হয়তো প্রকৃতির খেলা!!!!

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.