বলিউড অভিনেতা কিংবা অভিনেত্রীদের নিয়ে সাধারণের আগ্রহ কোনদিনই কিছু কম নয়। বলিউড কার্যত কন্ট্রোভার্সির দুনিয়া। বলিউড সেলিব্রিটিরা সেই কন্ট্রোভার্সিরই অংশ। তাদের কেন্দ্র করে বলিউডে তাই বহু গুঞ্জন, বহু বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অনেকেই সেগুলিকে গায়ে মাখেন না। দিন প্রতিদিন বিতর্কের সম্মুখীন হতে হতে তারা সেই বিতর্কর সঙ্গেই যেন অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে এই বিতর্ক কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত জীবনে অবশ্যই প্রভাব ফেলে।
বলিউডে এমন বহু বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয় অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের। তবে বলিউডের সর্বাধিক চর্চিত যে বিতর্কটি সেটি হল “ন্যুড বিতর্ক” তথা সেলেবদের নগ্ন দৃশ্য! আজকাল অবশ্য প্রত্যেক সিনেমা কিংবা ওয়েবসিরিজেই কমবেশি নগ্ন দৃশ্য থাকে। এই দৃশ্যগুলিকে এখন যথেষ্ট স্বাভাবিক নজরেই দেখেন দর্শক। বলা ভালো, উপভোগ করেন।
বলিউডের “ন্যুড বিতর্ক” এ বহু তাবড় তাবড় সেলিব্রিটির নাম জড়িয়েছে। মোনা সিং, প্রীতি জিন্টা, মল্লিকা শেরাওয়াত, ক্যাটরিনা কাইফ থেকে শুরু করে সলমন খান পর্যন্ত এই বিতর্ক থেকে রেহাই পাননি। এই বিতর্কের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তের। হঠাৎ করেই ইন্টারনেটে লিক হয়ে গিয়েছিল রাধিকার ন্যুড ভিডিও ক্লিপ! যা রাতারাতি বদলে দিয়েছিল অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবন।
এমনিতে রাধিকাকে বলিউডের বেশ কিছু সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। যৌনদৃশ্যে অভিনয় করার ক্ষেত্রে অভিনেত্রীর মনে বিশেষ কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই। তবে ইন্টারনেটে আচমকা তার যে ভিডিওটি লিক হয়ে গিয়েছিল তাতে কিন্তু তিনি বেশ বিব্রত বোধ করেছিলেন। কারণ ওই ভিডিওটি তার ছিল না। রাধিকার দাবি, ইন্টারনেটে রাধিকার ন্যুড ভিডিও বলে যে ভিডিওটিকে দাবি করা হচ্ছে সেটি আসলে তার নয়।
ইন্টারনেটে যখন ওই ভুয়ো ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে তখন বেশ কিছুদিনের জন্য তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে পর্যন্ত পারেননি! ভিডিওটি কে কেন্দ্র করে এতটাই বিব্রত বোধ করেছিলেন রাধিকা। একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানালেন তার মনের কথা। রাধিকা তখন তার “ক্লিন সেভেন” ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সেই সময় এই ভিডিও ক্লিপটি নেট মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। যে কারণে অস্বস্তির দরুন পরপর চার দিন তিনি বাড়ি থেকে বেরোতেই পারেননি!
“আমি চার দিন পর্যন্ত বাড়ি থেকে বেরতে পারিনি। মিডিয়া বা সোশাল মিডিয়া কী বলছিল তার জন্য নয়। আমার ড্রাইভার, নিরাপত্তাকর্মী, এমনকী আমার স্টাইলিস্টের বাড়ির লোক পর্যন্ত সেই ক্লিপ দেখেছিল। তার সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় ট্রোলিংও করা হয়েছিল প্রচুর। সে সময়টা খুব মুশকিল ছিল”, জানালেন অভিনেত্রী। এমন বিতর্কিত ভিডিও যে সেলিব্রিটিদের জীবনে কেমন প্রভাব ফেলে, তা রাধিকার এই সাক্ষাৎকার থেকে বেশ স্পষ্ট।
রাধিকার দাবি, “যে সেলফিগুলো তোলা হয়েছিল, সেটা দেখলে যে কেউ বুঝবেন ওটা আমি নই, অন্য কেউ”। তবে ভিডিওটি সেইসময় রাধিকার নামেই নেটদুনিয়ায় বেশ চলেছিল। তবে সব কিছুরই একটা ভালো দিক থাকে। “ক্লিন সেভেন”-এর পর রাধিকার কাছে ২০১৫ সালে “পার্চড” নামের আরেকটি বলিউড সিনেমার অফার আসে। ওই সিনেমাটিতে একজন যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন রাধিকা।
অভিনেত্রী জানাচ্ছেন, “পার্চড” ছবিতে অভিনয় করার বহু আগেই ইন্টারনেটে তার নাম নিয়ে ভুয়ো ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। তাতে যা বিতর্ক হওয়ার, তা তো হয়েই গিয়েছিল! তাই একজন যৌনকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করতে তার আর কোনও অসুবিধাই হয়নি। বরং তিনি আরও মন দিয়ে চরিত্রটিকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলেন।
অভিনেত্রীর ভাষায়, “আমি কোনও দিন চরিত্রের প্রয়োজনে সাহসী দৃশ্য অভিনয় করা থেকে পিছিয়ে যাইনি। পার্চড ছবিতে একজন যৌন কর্মীর চরিত্র করেছিলাম। সেখানে চিত্রনাট্যের দাবি ছিল। তবে সেটা আমার জীবনে অনেক বড় প্রভাব ফেলেছিল”। উল্লেখ্য, যৌনকর্মী হিসেবে এই ছবিতে একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল রাধিকা আপ্তেকে।
পর্দায় এইরকম ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য যে সাহসের দরকার হয় তা কিন্তু রাধিকা তার সেই কন্ট্রোভার্সিয়াল ভিডিও ক্লিপ থেকেই পেয়েছিলেন। রাধিকা জানাচ্ছেন, “এই ঘটনা পার্চড শুট করার সময় সাহস দিয়েছিল। সেখানে যখন ন্যুড দৃশ্যে অভিনয় করেছিলাম, বুঝেছিলাম আমার লুকনোর কিছু নেই”।