করোনা ভাইরাস। এটি একটি বৈশি^ক মহামারি। এর জন্য প্রয়োজন সর্বোচ্চ স্বাসস্থ্যসচেতনতা। সেফটি নিরাপত্তা বলুন, আর স্বাস্থ্য সচেতনতা যা-ই বলুন। শিক্ষিত সমাজে সম্ভাব্য এই আয়োজনের কোনো শেষ নেই। বরং আরো বেড়েছে। আপনি এটাকেই আবার মৃত্যুভীতি বলতে পারেন। আবার তুলনামূলক অশিক্ষিত, বিজ্ঞান বিমুখ ও অসচেতন জনগণের মধ্যে এ নিয়ে নেই তেমন আতঙ্ক! নেই কোনো মরণ-ভীতিও! অতএব, তাদের জন্য সেফটি নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। আছে এক বেলা রুটি রুজির আহার যোগানের চিন্তা। ডাল ভাতের তাগাদা। পেট পালার অবিরাম সংগ্রাম। জীবন মানেই এদের কাছে একটি সংগ্রাম। একটি যুদ্ধ।
আপনি হাট বাজারে যাদেরকেই পাবেন, তাদের সিংহভাগই দিনমজুর, অসহায়, খেটে খাওয়া মজদুর, কিংবা অবোধ, অশিক্ষিত নাগরিক। বাঁচার জন্য যাদের লড়াই। দু মুঠো অন্নের জন্য যাদের দৌঁড় ঝাপ। এরা মৃত্যুর ভয়ে তটস্থ। তবে সেটা আহার অন্নের ভয়। করোনা এদের কাছে কিচ্ছু না। এ শ্রেণির লোকজনই হলো, সাধারণ খেটে খাওয়া মজদুর কৃষক, শ্রমিক জনতা। এরা সহজ সরল গোছের। সরল জীবন যাপনে অভ্যস্থ।তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে আমরা জানতে পেরেছি। এ সকল সরল লোকজনের কেউ কেউ করোনা কী তাও বলতে পারে না। কেউবা মাস্ক ব্যবহার করতে অস্বীকারে করছে।
এরা অশিক্ষিত বিজ্ঞান বিমুখ সেকেলে মানুষ। ক্ষুধার তাড়না এদেরকে তাড়িয়ে বেড়ায়। দু মুঠো অন্নই এদের রোজ বিকেলের কাঙ্খিত পাওয়া। তবে করোনা-আতঙ্কে মরণের ভয় নেই। মৃত্যুর কোনো প্রস্তুতি নেই তাদের। এই ভাইরাস যে মৃত্যুর পদধ্বনি। মনে হয় এমন কোনো খবরই নেই তাদের কাছে। বহু বিত্তশালী অর্থের অধিকারী এই করোনার কাছে পরাজয় বরণ করেছে।
অর্থকড়ি ব্যাংকে জমানো কোটি কোটি টাকা তাদের কোনো কাজে আসেনি। আমাদের কিসের এত দম্ভ অহংকার? শিক্ষার, পদের, অর্থ কড়ির? না; এসবের কোনো মূল্য নেই। এই করোনকালীন পৃথিবী আমাদেরেকে শিক্ষা দিয়েছেÑ পদ পদবি কাড়ি কাড়ি টাকা পয়সা; সামাজিক স্ট্যাটাস এসবের কোনো মূল্য নেই। প্রতিদিন যে হারে মানুষ না ফেরার দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। তা দেখে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
লেখক : লেখক ও সাংবাদিক/ মীযান মুহাম্মদ হাসান